আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনের সময় ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। সম্প্রতি জারি করা ‘রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ (আরপিও)-এ নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে ৭৩(ক) ধারা, যার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সময়ের ভুয়া তথ্য বা বিভ্রান্তিকর প্রচার কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।
সংশোধিত ধারায় বলা হয়েছে—মনোনয়ন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে শুরু করে ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের আগ পর্যন্ত সময়ে যদি কেউ জেনে-বুঝে কোনো প্রার্থী, রাজনৈতিক দল বা নির্বাচন কমিশন-এর সুনাম ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে বা নির্বাচনি পরিবেশ ব্যাহত করতে মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য, ছবি, ভিডিও, অডিও কিংবা অন্য কোনো কনটেন্ট তৈরি, প্রকাশ, বিতরণ বা প্রচার করে, তবে তা ‘দুর্নীতিপূর্ণ আচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে।
এই অপরাধের জন্য ১৯৭২ সালের আরপিওর ৭৩ ধারার আলোকে সর্বনিম্ন দুই বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
নতুন সংযোজিত ধারায় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সরঞ্জাম, স্বয়ংক্রিয় বট, ভুয়া অ্যাকাউন্ট বা সিনথেটিক মিডিয়া ব্যবহার করে তৈরি বিভ্রান্তিকর কনটেন্টও এই অপরাধের আওতায় পড়বে। অর্থাৎ প্রযুক্তিগত মাধ্যম বা ডিজিটাল কৌশল ব্যবহার করে জনমত প্রভাবিত করা বা নির্বাচনি তথ্য বিকৃতি ঘটানোও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
আইনে আরও বলা হয়েছে, ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য শুধুমাত্র কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীকে লক্ষ্য করেই নয়—বরং পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া, নির্বাচন কমিশন বা সাধারণ জনমত প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ালেও তা শাস্তির আওতায় আসবে।
ইসি জানিয়েছে, সংশোধিত আরপিও জারির মাধ্যমে নির্বাচনি আইন সংস্কারের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এই নতুন বিধান অনুসারে খুব শিগগিরই প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের আচরণবিধিও প্রকাশ করা হবে।


