বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) বলেছেন, তাঁর দলের মূল নীতিগত অবস্থান হলো—ক্ষমতায় গেলে কোনো নতুন মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে না। তাঁর ভাষায়, “মেগা প্রকল্প মানেই মেগা দুর্নীতি।” তাই রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় হবে জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবাধিকার উন্নয়নেই—এই প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব বক্তব্য দেন। এ আয়োজনে যুবদল ও কৃষক দলের বহু নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
তারেক রহমান অনুষ্ঠানে বলেন, “বিগত স্বৈরাচারের সময়ে উন্নয়নের নামে অনেক অবকাঠামো তুলে দেওয়া হয়েছে। আইটি পার্কের নামে বহু স্থাপনা হয়েছে—কিন্তু সেগুলোর অধিকাংশই এখন বিয়ে–শাদির অনুষ্ঠান করার জায়গা ছাড়া কিছু নয়। প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি।” তিনি স্পষ্ট করে জানান, বিএনপির নতুন কোনো আইটি পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা নেই; বরং বিদ্যমান অবকাঠামোগুলো সংস্কার করে তরুণ উদ্ভাবকদের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনাই দল নিয়েছে।
তিনি জানান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, কর্মসংস্থানসহ আটটি খাতে কীভাবে কাজ করবে বিএনপি—তা নিয়ে ধারাবাহিক কর্মশালা চলছে এবং এই কর্মশালা ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর দাবি, “মানুষ জানতে চায় বিএনপি কী করবে। আমরা সবচেয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরেছি। আমাদের পরিকল্পনার ৪০ শতাংশও বাস্তবায়িত হলে দেশের বড় পরিবর্তন হবে।”
আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “দেশ রক্ষার জন্য আগামী নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। নো কম্প্রোমাইজ।” পাশাপাশি সবাইকে এখনই মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বিএনপি সব সময় দেশকে রক্ষা করেছে। এবারও দায়িত্ব আমাদের কাঁধে।”
মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, “বিগত স্বৈরাচারের সময়ে বিভিন্ন পেশার মানুষ মানবাধিকার হরণের শিকার হয়েছেন। বিএনপিই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে।” ক্ষমতায় গেলে ভিন্নমতের মানুষ যাতে নিরাপদে মত প্রকাশ করতে পারে—সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে আবরার ফাহাদের উদাহরণ—“মতামত প্রকাশের জন্য যেন আবরারের মতো আর কারও জীবন দিতে না হয়।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রুহুল কবির রিজভী (Ruhul Kabir Rizvi), আর সঞ্চালনা করেন যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।


