আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আসন ভাগাভাগি ও নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে বিএনপি (BNP) এবং যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা হঠাৎ করেই স্থগিত করা হয়েছে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সন্ধ্যা ৭টায় এ বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও যানজটসহ বিভিন্ন কারণে সব দল সময়মতো উপস্থিত হতে না পারায় শেষমেশ বৈঠকটি বাতিল করা হয়।
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, “আজকে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর একটি বৈঠক ছিল। সেটি অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, বৈঠকে অংশ নিতে তারা কার্যালয়ে উপস্থিত হলেও পরে জানতে পারেন তা স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিতের কারণ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা বিএনপির সঙ্গে ২০২২ সাল থেকে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছি। এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে আমরা অনেক নিপীড়ন, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এখন যখন নির্বাচন সামনে, তখন আমাদের প্রত্যাশা আছে। আমরা দলীয়ভাবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছি। এখন দেখার বিষয়, বিএনপি শরিক দলগুলোর জন্য কতটি আসন ছাড়ে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই একটি সমঝোতা হোক—ন্যায্যতার ভিত্তিতে। যাতে শরিক রাজনৈতিক দলগুলো খুশি থাকে এবং বিএনপিও দলগতভাবে সন্তুষ্ট থাকতে পারে।”
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (Revolutionary Workers Party) সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক সাংবাদিকদের জানান, “অনেক দল আজকে আসতে পারেনি, যার জন্য এই বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে। আমাদের জানানো হয়েছে যে আগামী শনিবার দুপুর ১২টায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।”
বিএনপি ইতোমধ্যেই ২৭২টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ ফাঁকা রয়েছে মাত্র ২৮টি আসন। অথচ শরিক জোটের অনেক নেতাই ঐ আসনগুলোর মধ্যে কয়েকটির জন্য আগ্রহী। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক শরিক দলের নেতা। তাঁদের দাবি, বিএনপি যেন ন্যায্যতার ভিত্তিতে শরিকদের জন্য আসন বরাদ্দ করে।
বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা ছিল গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণফোরাম, গণ অধিকার পরিষদ, নেজামে ইসলাম পার্টি এবং জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর অংশ)-সহ আরও কয়েকটি দলের। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসন ভাগাভাগির বিষয়ে সুষ্ঠু সমঝোতা না হলে জোটের অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা বেড়ে যেতে পারে।
