অর্ধশতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার ‘বিশেষ বৈঠক’, ব্যাখ্যা চাইল সদর দপ্তর

একটি বিশেষ বৈঠকে অংশ নেওয়া অর্ধশতাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা ও বিতর্ক। অনুমতি ছাড়া এ বৈঠকে যোগ দেওয়ায় পুলিশের সদর দপ্তর (Police Headquarters) কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে।

বিশেষ বৈঠক এবং এর প্রতিক্রিয়া

গত শুক্রবার ঢাকা (Dhaka) পুলিশ অফিসার্স ম্যাচে এক ইফতার মাহফিলের সময় বিশেষ বৈঠক করেন একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা। এতে একজন কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও একাধিক পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন। তারা বাহিনীর মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপিং ও বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকার বিষয়ে আলোচনা করেন।

পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম (Baharul Alam) রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “পুলিশ একটি শৃঙ্খলা বাহিনী। সদর দপ্তরকে না জানিয়ে কর্মকর্তারা স্টেশন ত্যাগ করতে পারেন না। এজন্য তাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।”

বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা

বিশেষ বৈঠকটি পরিচালনা করেন পুলিশ সদর দপ্তরের দুজন অতিরিক্ত ডিআইজি। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কাজী ফজলুল করিম (Kazi Fazlul Karim), ডিআইজি (প্রশাসন)।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন—
নাজমুল করিম খান (Nazmul Karim Khan), গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার
ফারুক আহমেদ (Faruk Ahmed), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার
মীর আশরাফ (Mir Ashraf), এসবির ডিআইজি
আমিনুল ইসলাম (Aminul Islam), রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি
– ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলার একাধিক পুলিশ সুপারসহ ১৫ থেকে ৪০তম ব্যাচের দু-তিনজন করে প্রতিনিধি

বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয়বস্তু

ডিআইজি (প্রশাসন) কাজী ফজলুল করিম বৈঠকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে বলেন।

এছাড়া—
– বাহিনীর নেতৃত্ব পুনর্গঠন ও পদোন্নতি নিয়ে আলোচনা হয়।
– আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনে বিভিন্ন ঘটনায় জড়িতদের স্থলে যোগ্য কর্মকর্তাদের পদায়নের দাবি উঠে।
– বর্তমানে ১০-এর অধিক অতিরিক্ত আইজিপির পদ, দ্বিগুণ ডিআইজি পদসহ অন্যান্য শূন্যপদ পূরণে উদ্যোগ না নেওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
– শীর্ষ কয়েকটি পদে নিজেদের পছন্দের লোক বসানোর বিষয়েও আলোচনা হয়।

পুলিশের প্রতিক্রিয়া ও ব্যাখ্যা

ফারুক আহমেদ (Faruk Ahmed) বলেন, “এটি কোনো গোপন বৈঠক ছিল না, ছিল ইফতার মাহফিল। এখানে নিজেদের মধ্যে খোলা আলোচনা হয়েছে, কেউ ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে।”

একজন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) বলেন, “কোনো সমালোচনা বা রাজনৈতিক আলাপ হয়নি। পুলিশের স্বার্থের বাইরে কিছু আলোচনা করা হয়নি।”

আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, “চারপাশে ষড়যন্ত্র চলছে। পুলিশের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

সদর দপ্তরের পদক্ষেপ

বৈঠকের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পুলিশের প্রশাসন ও পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট শাখা ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেয়। অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করায়—
নাজমুল করিম খান (Nazmul Karim Khan), গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার
নরসিংদী (Narsingdi)গাজীপুর (Gazipur) জেলার পুলিশ সুপারসহ কয়েকজনের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *