ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকের ‘ব্যাকগ্রাউন্ড নোট’-এ বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদ, চরমপন্থা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে তাদের নিজস্ব মূল্যায়ন উঠে এসেছে।
ওই নোটে দাবি করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ (Bangladesh)-এর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সে অনুযায়ী, বিএনপি (BNP), জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। তবে নির্বাচনের আগে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের সময়সীমা এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে, আর দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য বড় রাজনৈতিক দলগুলোর চাপ বাড়ছে।
নোটে আরও দাবি করা হয়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও নারীদের ওপর সহিংসতা, সম্পত্তি ধ্বংস, এবং বেআইনি জনসমাবেশের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান (General Waqar-uz-Zaman) এসব বিষয়ে সতর্ক করে বলেছেন, এই ধরনের সংঘাত দেশের জন্য হুমকি।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক শূন্যতার সুযোগ নিয়ে উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো ধর্মীয় বিষয়কে সামনে আনছে, যারা ‘ইসলামি খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার আদর্শ ধারণ করে বলে নোটে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, ১২ মার্চ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ (Hindu Buddhist Christian Unity Council) প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংখ্যালঘুদের ওপর মোট ২,১৮৪টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
তাদের ভাষ্যে, গুরুতর অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ইসলামি উগ্রবাদীদের অব্যাহত মুক্তির ঘটনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য ‘মারাত্মক উদ্বেগের’ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) দেশত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন এবং সেখানেই অবস্থান করছেন।
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য নেতাদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।