ব্রিটিশ পার্লামেন্টে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ

সাবেক নগর মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের নামে বাংলাদেশে ফ্ল্যাট নিয়ে বিতর্ক

টিউলিপ সিদ্দিক (Tulip Siddiq), যুক্তরাজ্যের সাবেক নগর মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে ‘মিথ্যাচার’ করার অভিযোগের মুখে পড়েছেন। এই অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশে তার নামে থাকা একটি ফ্ল্যাট, যা বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের জব্দ করা সম্পদের তালিকায় রয়েছে।

ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন এবং দুদকের অনুসন্ধান

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল শনিবার (৫ এপ্রিল) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশে ৬ লাখ পাউন্ড সমমূল্যের ওই ফ্ল্যাটটি নিয়ে অনিয়ম হয়েছে বলে দাবি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) (Anti-Corruption Commission)। সংস্থার অনুরোধে বর্তমানে ওই ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশ সরকার জব্দ করেছে এবং টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

টিউলিপ সিদ্দিক দাবি করেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ২০০২ সালে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে উপহার হিসেবে তিনি ফ্ল্যাটটি পান এবং ২০১৫ সালে সেটি তার বোন আজমিনার কাছে হস্তান্তর করেন। তিনি বলেন, ওই বছর তিনি ব্রিটিশ এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরই ফ্ল্যাটটি বোনকে দিয়েছেন।

মালিকানা নিয়ে বিরোধ ও রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্য

যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিনিস্টার রেজিস্টারে এমপিদের সম্পদ সংক্রান্ত তথ্যমতে, ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত ফ্ল্যাটটি টিউলিপের পারিবারিক যৌথ মালিকানায় ছিল এবং পরের মাসে তিনি তা হস্তান্তর করেন। কিন্তু ডেইলি মেইলের অনুসন্ধানে প্রকাশ, ঢাকার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নথি অনুযায়ী এখনো টিউলিপ সিদ্দিকই ফ্ল্যাটটির মালিক, যেমনটা দুদকও দাবি করে আসছে। এখন এই বিষয়টি বাংলাদেশের আদালতের বিচারাধীন।

হেবা দলিল এবং স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ

গত মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছে, টিউলিপ ২০১৫ সালে হেবা (ইসলামিক দান দলিল) পদ্ধতিতে ফ্ল্যাটটি বোন আজমিনার কাছে হস্তান্তর করার চেষ্টা করেছিলেন। হেবা হলো একটি ইসলামিক আইন অনুযায়ী দলিল, যার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভালোবাসার খাতিরে সম্পদ হস্তান্তর করা যায়। তবে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে নিবন্ধন ছাড়া এ ধরণের দলিল বৈধতা পায় না।

এছাড়াও দুদক জানিয়েছে, টিউলিপের হেবা দলিলটি ‘ভুয়া’ এবং এতে যে ব্যারিস্টারের নাম ও স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে, তিনি নিজে এ বিষয়ে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। ওই ব্যারিস্টার দাবি করেছেন, তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে।


 


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *