জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন ব্যবস্থা, রাজনৈতিক সংস্কার ও পুরনো ঘটনার বিচার নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) আমির ডা. শফিকুর রহমান (Shafiqur Rahman)। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘সংস্কার ও বিচার নিশ্চিত করেই নির্বাচন দিতে হবে।’
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাট (Lalmonirhat) জেলা কালেক্টরেট মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “নির্বাচন এমনভাবে হতে হবে যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে। তাই সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান—জাতীয় নির্বাচনের আগে তিনটি মৌলিক শর্ত পূরণ করতে হবে।” তবে তিনি ঠিক কী কী শর্তের কথা বলেছেন, তা খোলাসা করেননি, তবে পরবর্তী বক্তব্যে তার দিকনির্দেশ পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, “হাজারো প্রাণের বিনিময়ে, পঙ্গু হওয়া বহু মানুষের রক্তঝরার বিনিময়ে আজ দেশে যে রাজনৈতিক জাগরণ এসেছে, তা বৃথা যেতে দেওয়া যায় না। এজন্য অবিলম্বে সংস্কার জরুরি।”
জামায়াত আমিরের ভাষায়, এই সংস্কারের মূল দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর। তারা যদি আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসে, তবে খুব দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব। তিনি সতর্ক করেন, “যদি রাজনৈতিক দলগুলো এই সংস্কার এড়িয়ে যায়, তাহলে অনিবার্যভাবে একটা বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যার দায়ও তাদেরই নিতে হবে।”
প্রধান বক্তার দাবি, দেশের ১৮ কোটি নির্যাতিত জনগণের মুখে এখন একটাই দাবি—গণহত্যার বিচার, ২০২৪ সালের শহীদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, আহত ও পঙ্গুদের সুচিকিৎসা এবং গত ১৫ বছরে জমে ওঠা রাজনৈতিক-প্রশাসনিক ‘জঞ্জাল’ পরিষ্কার করে নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি করা।
“গণহত্যার বিচার ছাড়া জনগণ আর কিছুই ভাবতে রাজি নয়,” বলেন তিনি।
সমাবেশে তিনি সব রাজনৈতিক পক্ষ ও নাগরিককে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ‘সংযত, সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ’ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
লালমনিরহাট জেলা জামায়াতের আমির আবু তাহেরের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ফিরোজ হায়দার লাভলু এবং মজলিসে সূরা সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম রাজু।
তাদের সবার কণ্ঠেই ছিল নির্বাচনের আগে ‘মূলগত পরিবর্তন’ নিশ্চিত করার আহ্বান।