অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)-এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলা বাতিল করে দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বুধবার (২৩ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ (Dr. Syed Refaat Ahmed)-এর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের একটি ছয় সদস্যের বেঞ্চ এই গুরুত্বপূর্ণ রায় প্রদান করেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০০৭ সালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে মামলা দায়ের করেছিল, সেটি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আইনগতভাবে দুর্বল। সেই যুক্তিতে মামলাটি হাইকোর্টে বাতিল হলেও পরে আপিলের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়। সর্বোচ্চ আদালত সেই আপিল গ্রহণ করে মামলাটি বাতিলের চূড়ান্ত রায় দেন।
এই মামলায় ড. ইউনূসসহ আরও ছয়জন আপিল করেছিলেন। আদালতের রায়ে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন যখন ২০০৮ সালে তড়িঘড়ি করে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়, সেটি ‘সঠিক ছিল না’ বলেও মত দেন বিচারপতিরা। তবুও, মামলার প্রকৃতি, দায়েরের সময়কাল এবং প্রমাণের অভাবের বিষয়গুলো বিবেচনা করে আদালত মনে করেন, এই মামলা চলমান রাখা অনুচিত হবে।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মাত্র কয়েকদিন পর, ২০০৭ সালের ১১ আগস্ট দুদক ড. ইউনূসসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এরপর ২০০৮ সালের ৫ আগস্ট ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিলে, মাত্র ছয় দিন পরই মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন জানায় দুদক।
ড. ইউনূসের আইনজীবীরা আদালতে বলেন, এ মামলা ছিল ‘পরিস্থিতি-সৃষ্ট এবং হয়রানিমূলক’। ইউনূস নিজে চাননি মামলা বাতিল হোক—বরং তিনি তার আইনজীবীদের নির্দেশ দেন আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে। আদালতে সেই লড়াইয়ে জয়ী হয়ে আজ মামলা থেকে সম্পূর্ণ অব্যাহতি পেলেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।