সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ (Md. Abdul Hamid)–এর দেশত্যাগ ঘিরে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে চারজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে পাঠানো এক অফিসিয়াল বার্তায় জানানো হয়, অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং দু’জনকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বার্তায় আরও বলা হয়, বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের একজন কিশোরগঞ্জের সদর থানায় আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এবং অন্যজন স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। অপরদিকে, ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারকে তাদের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন)–কে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। যদিও পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত হয় বুধবার গভীর রাতে, যখন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গোপনে থাই এয়ারওয়েজ-এর একটি ফ্লাইটে থাইল্যান্ড পাড়ি জমান। বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একজন সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মামলা চলাকালীন তিনি কীভাবে দেশত্যাগ করলেন এবং পুলিশের নজরদারির ঘাটতি কেন ঘটল?
সরকারি মহল ও প্রশাসনের অভ্যন্তরে এই ঘটনার পর প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক পর্যবেক্ষক বলছেন, ঘটনাটি শুধু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গাফিলতির বিষয়ই নয়, বরং এতে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনিক সমন্বয় এবং নীতি বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিয়েও।
ঘটনার পর থেকেই আবদুল হামিদের বিদেশ যাত্রা এবং তাকে ঘিরে থাকা মামলাগুলোর বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল ও অসন্তোষ বেড়েছে। এখন দেখার বিষয়—তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কী উঠে আসে এবং পরবর্তী সময়ে আরও কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় কিনা।
উল্লেখ্য এর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগে সহায়তাকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন , ‘তাঁদের (আবদুল হামিদকে বিদেশে যেতে সহায়তাকারীদের) কোনো অবস্থায় ছাড় দেওয়া যাবে না। আর যদি শাস্তির আওতায় না আনি, তাহলে আমি সে সময় চলে যাব।’