উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক নিয়ে যা জানালেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম

সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকের বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam)। শনিবার (১০ মে) যশোরের কেশবপুরের পাথরা পল্লী উন্নয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারের দেওয়া বিবৃতির প্রেক্ষিতে এ বৈঠক ডাকা হয়েছে।

শফিকুল আলম জানান, “আজ রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মূলত আইসিটি আইনের অধ্যাদেশ প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা হবে। এ কারণেই এ বৈঠক জরুরি হিসেবে ধরা হয়েছে।”

এ সময় সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ (Abdul Hamid) সংক্রান্ত আলোচনাতেও কিছুটা আলোকপাত করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগের ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, তা নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। “কিছু জড়িতের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে,” উল্লেখ করে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, বাকিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

ভারতের প্রতি কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে শফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।” এর প্রতিক্রিয়ায় কিছু বাংলাদেশি মিডিয়ার সম্প্রচার ভারতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শফিকুল আলমের ভাষায়, “আমরা ভারতের মতো প্রতিশোধমূলক আচরণ করতে চাই না। তবে দীর্ঘদিন ধরেই তারা আমাদের নিয়ে নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে আসছে।”

ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। শফিকুল আলম বলেন, “ভারতের মিডিয়াগুলো নাটকীয় উচ্চারণে বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করে, এটাকেই তারা সাংবাদিকতা ভাবে। তাদের তুলনায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতা অনেক বেশি দায়িত্বশীল ও প্রশংসনীয়।”

এ প্রসঙ্গে ইউটিউবের মাধ্যমে বাংলাদেশি কিছু টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধের বিষয়েও হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। প্রেস সচিবের মন্তব্য, “বাংলাদেশের যেসব মিডিয়া বন্ধ করা হয়েছে, তারা অনেক ভালো নিউজ করে। এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”

অন্যান্য দিন প্রেস ব্রিফিংয়ের ঘণ্টাখানেক আগে থেকে দু-একজন করে গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত হতে থাকলেও আজ (শনিবার) সন্ধ্যা ৭টার মধ্যেই কানায় কানায় আসন পূর্ণ হয়ে যায়। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা তখন থেকেই নিউজ বুলেটিনে যুক্ত হয়ে লাইভে কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রেস ব্রিফিং শুরু হতে পারে এমনটি জানান।

এমন সময় উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ আসেন। সবাই মনে করেন কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্রিফিং শুরু হবে। কিন্তু উপ-প্রেস সচিব জানান, আপনাদের মধ্যে গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া অন্য কেউ যেন না থাকে সে বিষয়টি আপনারা খেয়াল রাখবেন।

এ সময় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের অপেক্ষা করতে বলেন। ভেতরে তখন মিটিং শুরু হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রথমে মিটিং শুরু হয়েছে বললেও পরক্ষণেই বলেন, আমি কিছু জানি না। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের আবার অপেক্ষার অনুরোধ জানিয়ে ভেতরে চলে যান। অপেক্ষায় থাকেন গণমাধ্যম কর্মীরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *