এবার ফেসবুকে বন্ধ হচ্ছে আ’লীগ সংশ্লিষ্ট সকল পেজ

আন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে অনলাইন এবং অফলাইনে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে আওয়ামী লীগ (Awami League)-কে। সরকারের নির্দেশে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি – BTRC)।

রোববার (১১ মে) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব (Fayez Ahmad Tayyeb) জানান, অন্তর্বর্তী উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এর আওতায় বিটিআরসি মেটা (Meta)-সহ সকল অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে চিঠি পাঠাবে, যেখানে অনুরোধ জানানো হবে আওয়ামী লীগের অনলাইন কার্যক্রম—বিশেষ করে ফেসবুক পেজ—বন্ধ করতে।

বর্তমানে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নামে দলের একটি ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ রয়েছে, যার ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। সরকারী নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার পরপরই দলটি এই ফেসবুক পেজে একাধিক প্রতিবাদী পোস্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে স্পষ্টভাবে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়েছে। একই সঙ্গে তারা একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি শেয়ার করেছে এবং নিয়মিত পোস্টের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে যাচ্ছে।

এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক দলের অনলাইন উপস্থিতিকে নয়, বরং দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ এবং ডিজিটাল গণমাধ্যমের ভবিষ্যত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার ও রাজনৈতিক দলের দ্বন্দ্ব যদি অনলাইন স্পেসেও সীমারেখা অতিক্রম করে, তাহলে তা গণতান্ত্রিক ভারসাম্য এবং নাগরিক অধিকার নিয়েও নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।

বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, মেটা ও অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করে নির্দেশ কার্যকর করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। চিঠিতে দলটির নামীয় ও সংশ্লিষ্ট সকল পেজ, গ্রুপ এবং অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করার অনুরোধ থাকবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের এই সিদ্ধান্ত শুধু প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ নয়, এটি রাজনৈতিক বার্তাও বহন করছে। একদিকে অন্তর্বর্তী সরকার নিজেকে ‘নিরপেক্ষ’ রাখার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে বড় একটি রাজনৈতিক শক্তিকে রাষ্ট্রীয় ও অনলাইন পরিসর থেকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে—যা দেশের রাজনীতিতে এক নতুন মেরুকরণ তৈরি করতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *