আওয়ামী লীগের (Awami League) কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত দেশের অন্য কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে না বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার (Interim Government)। সোমবার (১২ মে) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপনটি ১২ মে তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Ministry of Home Affairs) থেকে জারি করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নেয়া এই পদক্ষেপের ফলে আওয়ামী লীগসহ এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কোনো রকমের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর নেতা, কর্মী ও সদস্যদের ওপরই প্রযোজ্য হবে।
তবে সরকারের দাবি, প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মুক্ত মতপ্রকাশ বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ওপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও দলটি বা সরকারের পদক্ষেপের যৌক্তিক, গঠনমূলক বা আইনসম্মত সমালোচনা ও বিশ্লেষণ অব্যাহত রাখা যাবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত প্রায় ১৫ বছর ধরে বিশেষ করে গত বছরের ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানের সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিরুদ্ধে হামলা, গুম, খুন, অমানবিক নির্যাতন, সন্ত্রাসী তৎপরতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। এর জেরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসহ দেশের ফৌজদারি আদালতগুলোতে বহু মামলা বিচারাধীন রয়েছে। সরকার বলেছে, মামলার বাদী, সাক্ষী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে ভয়-ভীতির পরিবেশ তৈরি এবং বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতেই আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো হামলা ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষ করে ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে সংঘটিত বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির ঝুঁকি দেখা দিয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে বলে অন্তর্বর্তী সরকার দাবি করে।