গাজীপুরের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে বুধবার দুপুরে ঘটে গেল চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা। ২০২২ সালের স্নাতক (পাস) কোর্সের পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ উপাচার্যের ওপর সরাসরি হামলার চেষ্টা চালায়। অটোপাসের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের এই বিক্ষোভ হঠাৎই সহিংস রূপ নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ (A S M Amanullah) গাড়ি থেকে নামার মুহূর্তে তাকে ঘিরে ধরেন শিক্ষার্থীরা। অটোপাসের দাবিতে স্লোগান তুলতে থাকেন তারা। ঠিক তখনই ভিড়ের মধ্যে থেকে কয়েকজন দুষ্কৃতকারী তার ওপর চড়াও হয় এবং তিনি শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন বলে জানা যায়।
তবে ঘটনার পরপরই সাংবাদিকরা অধ্যাপক আমানুল্লাহর বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুরো ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে হামলাকারীদের শনাক্তের কাজ চলছে এবং গাজীপুরের গাছা থানায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
করোনা মহামারি ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় ২০২২ সালের স্নাতক (পাস) শিক্ষার্থীরা যথাযথ ক্লাস ও প্রস্তুতির সুযোগ পাননি বলে দাবি করে তারা দীর্ঘদিন ধরেই অটোপাসের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেই দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে নিয়মিত পরীক্ষার আয়োজন করে, যেখানে প্রায় ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন।
পরবর্তীতে কিছু শিক্ষার্থীর ফলাফলে অসন্তোষ প্রকাশ পেলে গ্রেস মার্ক ও খাতা পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ফলাফল চলতি মে মাসের মধ্যেই প্রকাশের কথা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযোগ, যেসব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং কিছু বহিরাগত উসকানিদাতা, তারা মিলেই এই উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এদের প্ররোচনায় কিছু শিক্ষার্থী নতুন করে অটোপাসের দাবিতে আন্দোলনে নামে এবং সেটিই বুধবারের হামলার দিকে গড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “কোনোভাবেই অটোপাস দেওয়া হবে না। যারা নিয়মিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে, তাদের নীতিমালার ভিত্তিতেই মূল্যায়ন করা হবে। উপাচার্যের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।”
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।