মানিকগঞ্জে সাইবার নিরাপত্তা আইন অনুসারে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মানিকগঞ্জ জেলা শাখার দুই নেতাকর্মী। বুধবার (২১ মে) সকালে সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। অভিযুক্ত দুই নেতা হচ্ছেন—পৌরসভার উত্তর সেওতা এলাকার মতিয়ার রহমানের ছেলে মেহেরাব হোসেন (১৯) এবং শিবালয়ের নবগ্রাম এলাকার রজ্জব মোল্লার ছেলে আশরাফুল ইসলাম রাজু (২১)। দু’জনই সংগঠনের যুগ্ম সদস্য সচিব পদে রয়েছেন।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন (Yasmin Khatun)। তিনি জানান, সাংবাদিক আনিসুর রহমান সাব্বিরের করা মামলার ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তির নামে মামলা দায়ের করে এবং মামলা থেকে মুক্তি দেওয়ার নামে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতেন।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম আমান উল্লাহ (SM Amanullah) বলেন, গ্রেফতার দুই নেতা চাঁদাবাজি, পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ এবং সামাজিক মাধ্যমে মানহানিকর তথ্য ছড়ানোর মতো গুরুতর অভিযোগের মুখে পড়েছেন। মামলার বাদী সাংবাদিক আনিসুর রহমান সাব্বির অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্তরা তার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়।
ওসি আরও জানান, মোবাইল নম্বর ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল ডিভাইসে চাঁদাবাজির সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, সংগঠনের পক্ষ থেকে পুরো ঘটনার ভিন্ন ব্যাখ্যা এসেছে। মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রমজান মাহমুদ দাবি করেন, গ্রেফতার হওয়া দুই নেতা গত জুলাই-আগস্টে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে’ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনায় স্পষ্টভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই গ্রেফতার সরকার বিরোধী কণ্ঠরোধের অংশ, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে এটিকে আইন প্রয়োগের একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রয়াস হিসেবে দেখলেও, মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং ছাত্র রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এটি হয়তো ভিন্নমত দমনের একটি নতুন প্রবণতা।