দেশে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছে : ড. ইউনূস

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর দেশ এক ধরনের যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)। রোববার রাজনৈতিক অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠকে এই মন্তব্য করেন তিনি। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam) সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন।

প্রেস সচিব জানান, ড. ইউনূস বলেছেন, “আমরা এখন বড় এক যুদ্ধাবস্থার মধ্যে আছি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তারা সবদিক দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমাদের এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “তারা কিছুতেই এটা মেনে নিতে পারছে না। সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ থামাতে চায়। আমাদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে সামনে এগোতে হবে। আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে যতটুকু দাঁড়াতে পেরেছি, সেটা যেন আগাতে থাকে।”

বৈঠকে উপস্থিত সবাইকে একসঙ্গে বসাতে পারায় সাহস পেয়েছেন বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা। তাঁর কথায়, “আমি যদি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারি, তাহলে নিজেকে অপরাধী মনে করব। আমার কাছে এটা একটি মহাসুযোগ—একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রকে আবার টেনে তোলার সুযোগ।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ও দেশের বাইরেও একধরনের যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে আমাদের এগিয়ে যাওয়া থেমে যেতে পারে, সবকিছু ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। আবার যেন জাতি গোলামির দিকে না ফিরে যায়, সেটাই তাদের উদ্দেশ্য।”

চক্রান্তকারীদের উদ্দেশ্য নিয়েও স্পষ্ট অবস্থান নেন ইউনূস। তিনি বলেন, “যারা এই ষড়যন্ত্র করছে, তাদের লক্ষ্যই হলো—আমরা যেন আবার পরাধীন হই। আমি যতদিন আছি, দেশের কোনো অনিষ্ট হবে—এমন কিছু হবে না। আপনাদের আমি এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি।”

নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব জানান, “প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলেছেন—নির্বাচন ৩০ জুনের পর আর হবে না। এই সময়সীমার মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন করা হবে। তিনি নিজেই উপযুক্ত সময়ে রোডম্যাপ ও নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করবেন।”

এ বিষয়ে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন ইউনূস—“আমি ৩০ জুনের পর একদিনও এই দায়িত্বে থাকব না।”

এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, “আমাদের সরকারের তিনটি মূল কাজ—সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। আমরা যদি পূর্ণ সংস্কার করতে পারি, মানুষ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও আমাদের ওপর আস্থা রাখবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *