অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে অভিযান: বন্ধ হচ্ছে হাজারো মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট

বাংলাদেশে অনলাইন জুয়া দমনে সরকার কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। সাইবার স্পেসে জুয়া প্রতিরোধের অংশ হিসেবে প্রায় ১ হাজার ১০০টি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব (Fayez Ahmad Tayyab)।

রবিবার নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (National Cyber Security Agency – NCSA) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, অনলাইন জুয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ এবং এটি দমনে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, সদ্য প্রণীত ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর ২০ ধারা অনুযায়ী, অনলাইন জুয়ার যেকোনো কার্যক্রম এখন থেকে আইনত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

এই আইনের আওতায় যে কাজগুলো নিষিদ্ধ:
– জুয়া খেলা
– জুয়া পরিচালনার জন্য অ্যাপ, পোর্টাল বা যেকোনো ডিজিটাল মাধ্যম তৈরি ও ব্যবস্থাপনা
– জুয়ায় উৎসাহ প্রদান বা সহায়তা করা
– জুয়া-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ
– সরাসরি বা পরোক্ষভাবে জুয়ার প্রচার-প্রচারণা চালানো

এছাড়াও অধ্যাদেশের ২১ এবং ২২ ধারায় জুয়া-সম্পর্কিত আর্থিক লেনদেন, প্রতারণা এবং জালিয়াতির মতো কার্যক্রমও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত অনলাইন জুয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১১০০ জনেরও বেশি এজেন্টকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও জানান, যারা পূর্বে জুয়ার বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছেন, তাদের এখনই এসব কার্যক্রম থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে তিনি বলেন—এই অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত পেশাজীবী, সেলিব্রিটি, বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া কোম্পানি, মিডিয়া বায়ার, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তবে এখানেই শেষ নয়। অনলাইন জুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন অপারেটর, সফটওয়্যার এবং টুলিং কোম্পানি, এমএফএস এজেন্ট, ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠান, এমনকি ক্রিপ্টোকারেন্সি (Cryptocurrency) ও হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ সরবরাহকারী সংস্থাগুলোকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

সবশেষে তিনি অনুরোধ জানান, জুয়া-সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য সরাসরি notify@ncsa.gov.bd ঠিকানায় পাঠাতে, যাতে দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *