সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার

সচিবালয়ের চলমান কর্মবিরতির প্রেক্ষিতে প্রতিবাদরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরখাস্তের দাবি তুলেছেন সারোয়ার তুষার (Sarowar Tushar), যিনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party – NCP)-র যুগ্ম আহ্বায়ক। সম্প্রতি জারি হওয়া ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ ঘিরে যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তার জবাবে তুষার এই কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি এই আন্দোলনের পেছনে কারা ইন্ধন দিচ্ছে, তা প্রকাশ্যে আনার জন্যও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক পোস্টে সারোয়ার তুষার বলেন, “সরকারি চাকরি (সংশোধিত) অধ্যাদেশ-২০২৫ বাস্তবায়ন হলে আমলারা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত আমলাদের চাকরিচ্যুতির বিধান থাকায় এটা জনগণের পক্ষে বড় এক সংস্কার।”

এই পটভূমিতে রবিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে অধ্যাদেশটি জারি করেছে, তা অনুযায়ী চারটি অপরাধের ভিত্তিতে আমলাদের চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। এরপর অভিযুক্তকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না, তা জানাতে আরো সাত কর্মদিবস সময় পাবেন তিনি।

তবে এই অধ্যাদেশকেই ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ আখ্যা দিয়ে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তারা সচিবালয়ে কর্মবিরতির মাধ্যমে দাবি তুলেছেন, এই অধ্যাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

এর জবাবে সারোয়ার তুষার বলেন, “এমন একটি গণবান্ধব সংস্কারের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছে, তারা নিজেদের সুবিধা হারানোর আশঙ্কায় অচলাবস্থা তৈরি করছে। এদেরকে বরখাস্ত করে নতুন লোক নিয়োগ দেওয়া উচিত।”

তুষার আরও বলেন, “এই আন্দোলনের পেছনে যে ইন্ধন রয়েছে, তা নিশ্চয় কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের অংশ। সরকারের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা এবং গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রকৃত উৎস জনসম্মুখে প্রকাশ করা।”

এই মন্তব্যে প্রশাসনিক মহলে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। একপক্ষে যখন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরিজীবনের নিরাপত্তা ও অধিকার সংরক্ষণের প্রশ্ন তুলছেন, অন্যপক্ষে সরকারপন্থী ও রাজনৈতিক নেতাদের একটি অংশ কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বর্তমানে সচিবালয়ে অনেক দপ্তরে কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রশাসনিক কাজের গতি কমে যাওয়ায় নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সরকার এখন দুই চাপে—প্রতিবাদ সামলানো ও প্রশাসনিক কার্যকারিতা বজায় রাখা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *