রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের একটি বহুতল ভবনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটে এক দম্পতিকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে এক ব্যক্তি। বুধবার (২৮ মে) দুপুরে ঘটে যাওয়া এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘাতককে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন মো. পাপ্পু (৩১) ও তার স্ত্রী দোলন দোলা (২৯)। পাপ্পু বরগুনার বামনা উপজেলার উত্তর কাকচিড়া গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় তিনি ছিলেন জেনারেল ফার্মা নামের একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি। তার স্ত্রী দোলন ঢাকায় এলএলবি পাস করে একটি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করছিলেন এবং মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনের মিল্লাত ক্যাম্পসংলগ্ন ওই ফ্ল্যাটে সাবলেট থাকতেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে পাপ্পু মঙ্গলবার ঢাকায় এসে স্ত্রীর সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন।ঘটনার পরপরই যে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়, তার নাম গাউস মিয়া (৩৫)। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং রাজধানীর পল্লবী এলাকায় ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করতেন। পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গাউস মিয়া দাবি করেছেন, দোলনের সঙ্গে তার পূর্বে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল এবং তিনি খালাতো ভাই পরিচয়ে ওই বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন।
ঘটনার সময় পাশের একটি ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া ছুরি হাতে গাউস মিয়াকে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখেন। কিছু সময় পর দম্পতির আর্তচিৎকার শুনে তিনি বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বাইরে থেকে দরজা আটকে দিয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে পাপ্পু ও দোলনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকেই গাউস মিয়াকে আটক করে।
সালেহ মুহাম্মদ জাকারিয়া (Saleh Muhammad Zakaria), পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি), জানিয়েছেন, প্রেমঘটিত বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে পুরো এলাকাজুড়ে শোক এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবেশীদের অনেকে বলছেন, দোলন ও পাপ্পু স্বাভাবিক জীবনযাপন করতেন, এমন মর্মান্তিক ঘটনার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিলেন না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনার গভীরে গিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।
