ক্ষমতা হারিয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। সেই সাথে বদলে গেছে রাজনীতির মাঠের চালচিত্রও। তবে এই নতুন বাস্তবতায় এক নতুন বিতর্ক সামনে এসেছে—দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে হাসিনা-বিরোধী ‘বিপ্লবী’ হিসেবে পরিচিত ইলিয়াস হোসেন (Elias Hossain) ও পিনাকী ভট্টাচার্য (Pinaki Bhattacharya) এখন প্রশ্নের মুখে। তারা শুধু বিতর্কে নন, বরং সরাসরি জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেই অভিযোগ উঠেছে। কোন রকম ভিত্তি প্রমান ছাড়াই যখন যাকে প্রয়োজন ইন্ডিয়ার দালাল, র এর দালাল ট্যাগ দিয়ে অনলাইনে তাদের অন্ধ ভক্তদের মধ্যে প্রচারনা চালাচ্ছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার জুলাই আন্দোলনের সম্মুখ সারির যোদ্ধা নুরুল হক নুরু ও মোঃ তারেক রহমানও সেই তালিকায় চলে এসেছে। মোট কথা বাইনারি চিন্তাধারার ইলিয়াস পিনাকী গং কেবলমাত্র মনে করে হয় তুমি আমার কথায় বিশ্বাস করবা, নতুবা তোমাকে ভারতীয় দালাল, র এর দালালে বলে জনসম্মুখে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, তথ্য প্রমান থাকুক কিংবা না থাকুক।
নুরুল হক নুরু এবং পিনাকী ইলিয়াসের সাথে একসময়ের ঘনিষ্ঠ মোঃ তারেক রহমানকে নিয়ে ইলিয়াসের ভিডিও বানানোর পর, গণঅধিকার পরিষদ (Gono Adhikar Parishad)-এর সভাপতি। ফেসবুকে দেওয়া এক ক্ষুব্ধ পোস্টে নুর বলেন, “এখন তো হাসিনা বা লীগ ক্ষমতায় না। তো তোমাদের এতো দেশপ্রেম, তোমরা দেশে আসো না কেন বেপ্লবি ভিউ ব্যবসায়ী বাটপাররা?”
নুরের বক্তব্যে ইঙ্গিত স্পষ্ট—যখন দেশের জনগণ রাস্তায় রক্ত ঝরিয়েছে, কারাগারে গেছে, তখন এলিয়াস ও পিনাকী দেশের বাইরে বসে কেবল ইউটিউব আর ফেসবুকে চটকদার ভিডিও বানিয়ে ভিউ আর ডলার কামিয়েছেন। তারা রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে নিজেদের নিরাপদ করে ফেললেও, এখন দেশের অভ্যন্তরে জনমানসে বিভাজন তৈরি করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
দেশপ্রেমের প্রশ্নে ফিরে আসার আহ্বান
নুর তার পোস্টে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, যদি সত্যিই দেশপ্রেম ও সততা থাকে, তাহলে দেশের মাটিতে ফিরে এসে বাস্তব পরিবর্তনে ভূমিকা রাখুন। “ধান্দাবাজি পরিহার করে দেশের পরিবর্তনে কাজ কর,”—এই কড়া মন্তব্যের মাধ্যমে নুর স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যারা শুধু অনলাইনে বিপ্লবের নাটক করেন, তারা এখন আর গ্রহণযোগ্য নন।
অনলাইন বিপ্লবের আসল রূপ?
একসময় যারা শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচক ছিলেন, এখন তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। একদিকে মাঠের কর্মীরা ত্যাগ স্বীকার করে বদল এনেছে দেশে, অন্যদিকে অনলাইনের কিছু ‘বিপ্লবী’ এখন জাতির ঐক্যে ফাটল ধরাচ্ছেন।
নুরুল হক নুরের এই পোস্টের পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, সময় এসেছে অনলাইন এক্টিভিজম আর বাস্তব আন্দোলনের পার্থক্য স্পষ্ট করে দেখার। এবং এই প্রেক্ষাপটে এলিয়াস হোসেন ও পিনাকী ভট্টাচার্যের ভূমিকা খোলাখুলি প্রশ্নবিদ্ধ।
