ফরিদপুরের নগরকান্দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংশ্লিষ্ট নেত্রী বৈশাখী ইসলাম বর্ষার ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় স্থানীয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফর আলীকে অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শনিবার (৩১ মে) ফরিদপুরের পুলিশ সুপার এ আদেশ জারি করেন।
পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “প্রশাসনিক কারণে” ওসি সফর আলীকে নগরকান্দা থানা থেকে সরিয়ে ফরিদপুর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. শামসুল আজম।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ভবুকদিয়া এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন বৈশাখী ইসলাম বর্ষা। তার ছোট বোনকে ইভটিজিং করার অভিযোগে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বর্ষাকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায়।
বৈশাখী ইসলাম ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠক হিসেবে পরিচিত। জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত গণআন্দোলনের সময় তিনি ফরিদপুর অঞ্চলের মুখ্য সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে মাঠে নামেন তার সহযোদ্ধারা। ফরিদপুর থেকে ছুটে গিয়ে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে এলাকাবাসীর একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদের ওপর ফের হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি অনুপস্থিত ছিল, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক শাহ্ মো. আরাফাত এই বিষয়ে বলেন, “ঘটনার অনেক পরে পুলিশ এলেও তারা কোনো সক্রিয় ভূমিকা নেয়নি। সেনাবাহিনীর ক্যান্টনমেন্টে কল করলেও কোনো সহায়তা মেলেনি। আমরা যারা ২৪ সালের আন্দোলনের অংশ ছিলাম, আজ আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?”
তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রীয় নেতারা, আপনারা এসি গাড়িতে পুলিশ প্রোটেকশন নিয়ে ঘোরেন, অথচ জেলা পর্যায়ের নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আপনাদের কোনো উদ্যোগ নেই। শহীদদের রক্তের সঙ্গে এটা বেঈমানি ছাড়া কিছু নয়।”
এদিকে অভিযুক্ত ওসি সফর আলী ২০২৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে নগরকান্দা থানার দায়িত্বে ছিলেন। তার ওপর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলো বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয়ভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।