‘বাংলাদেশে যদি বড় মাফিয়া থাকে, আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া, আমাদের চেয়ে বড় মাফিয়া নেই’— এনসিপি নেতা মানিক

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ঈদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে দেওয়া এক বক্তব্যে রাজনৈতিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতা ও বেসরকারি কারা পরিদর্শক জোবাইরুল আলম মানিক (Zobairul Alam Manik)। তিনি সরাসরি ঘোষণা দেন, “এখন বাংলাদেশে যদি বড় মাফিয়া থাকে, আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া। আমাদের চেয়ে বড় মাফিয়া নেই।”

সোমবার দুপুরে আনোয়ারার একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে এনসিপির আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তাঁর এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (Facebook) সরাসরি সম্প্রচারিত হয় এবং মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে।

মানিক বলেন, “আমরা জুলাই অভ্যুত্থান সফল করেছি। বিগত ১৬-১৭ বছর কেউ এ নেতৃত্ব দিতে পারেনি। এটি একটি রাজনৈতিক বিপ্লব। কেউ যদি বলে যে শিক্ষার্থীরা তাদের কাজ শেষ করেছে, তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যাক। আমরা বলব, ১৬ বছরের একজন মাফিয়াকে হটাতে পারছি। আমাদের বুঝ দিয়ে আবার যদি কেউ মাফিয়া হয়ে উঠতে চায়; আমরা তাদের বলব, এখন বাংলাদেশে যদি বড় মাফিয়া থাকে, আমরাই হচ্ছি বড় মাফিয়া। আমাদের চেয়ে বড় মাফিয়া নেই”

তার এই উক্তিতে চমকে ওঠে উপস্থিত জনতা। তবে এটাই ছিল না তাঁর বক্তব্যের একমাত্র বিস্ফোরণ। তিনি স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “কেউ যদি আবার জাবেদ হতে চায়—সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী (Saifuzzaman Chowdhury)—যদি আমাদের ভোট কেড়ে নিতে চায়, তাহলে আমরা আবু সাঈদ, মুগ্ধ ও ওয়াসিম আকরামের মতো শহীদ হয়ে তাদের রুখে দেব।”

তিনি আরও বলেন, “সংখ্যা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ১৮ জুলাই আমরা মাত্র ২০-২৫ জন ছাত্র-জনতা নিয়ে শাহ আমানত সেতু ব্লক করেছিলাম। যদি তখন আমরা আনোয়ারা-কর্ণফুলী থেকে চট্টগ্রামে নেতৃত্ব দিতে পারি, তবে এখন তো আরও শক্তিশালী হয়েছি।”

এনসিপি নেতা বলেন, “কেউ যখন ভালোবেসে আমাদের ‘জুলাই–যোদ্ধা’ বলে ডাকে, তখন আমাদের দায়িত্ব বেড়ে যায়। আমরা অনুপ্রাণিত হই। এই আনোয়ারা থেকে মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমনকি মেয়রও উঠে আসবে—আমাদের মধ্য থেকেই।”

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এম ইউ মাহমুদ। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন জুলাই আন্দোলনে আহত মো. জাবেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা শাহেদুল আলম, এনসিপি নেতা দেলোয়ার হোসেনসহ আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

অনুষ্ঠানে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া এবং আহত যোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পুরো আয়োজন জুড়ে ছিল উত্তেজনা, প্রত্যয়ের বার্তা এবং এক ধরনের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের ঘোষণা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *