বিএনপি’র পক্ষ থেকে জানানো হলো ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশের আগামীর রাজনৈতিক গতিপথ কোন দিকে যাবে—এই প্রশ্নের উত্তর পেতে নজর এখন লন্ডনের একটি অভিজাত হোটেলের দিকে। আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) সেখানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, যেখানে মুখোমুখি হবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) ও তারেক রহমান (Tarique Rahman), বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

সোমবার (৯ জুন) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। দলের চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

একান্ত সাক্ষাতে রাজনীতির ভবিষ্যৎ রূপরেখা?

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক আলোচনাই নয়—দুই ব্যক্তিত্বের মধ্যে কিছুটা সময় নিরিবিলি একান্ত কথোপকথনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। রাজনীতির চলমান সংকট, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা এবং সম্ভাব্য রাজনৈতিক সমঝোতার রূপরেখা উঠে আসতে পারে এই বৈঠকে।

এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে এমন সময়, যখন ড. ইউনূস চার দিনের সরকারি সফরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। স্থানীয় সময় অনুযায়ী মধ্যরাতে (বাংলাদেশ সময় ভোরে) লন্ডনে পৌঁছার কথা রয়েছে তার।

রাজকীয় সম্মাননা ও কূটনৈতিক ব্যস্ততা

এই সফরে রয়েছে একাধিক উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি। ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস (King Charles III)-এর সঙ্গে বাকিংহাম প্যালেসে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে দেখা করবেন ড. ইউনূস। এ সময় তিনি রাজার হাত থেকে ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন। এরপর আয়োজিত রাজকীয় ভোজসভায় অংশ নেবেন তিনি, যেখানে ব্রিটিশ রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও উপস্থিত থাকবেন।

এছাড়া তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্পিকার ও প্রধানমন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন। অংশ নেবেন চ্যাথাম হাউস আয়োজিত একটি সংলাপেও, যেখানে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে।

আলোচনায় অর্থপাচার ইস্যুও

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সফরের একাধিক পর্বে বাংলাদেশের পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে। লন্ডনে অবস্থানকালে কূটনৈতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।

আগামী শনিবার (১৪ জুন) ড. ইউনূসের দেশে ফেরার কথা রয়েছে। এর আগেই বিএনপি নেতার সঙ্গে তার বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠকটি সম্পন্ন হবে। বাংলাদেশের রাজনীতির উত্তাল সময়ের প্রেক্ষাপটে এই সাক্ষাৎ কী বার্তা বয়ে আনে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।