দলের নেত্রীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগে সারোয়ার তুষারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ

জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party – NCP)–এর অন্যতম শীর্ষ নেতা ও যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার-এর বিরুদ্ধে উঠেছে নৈতিক স্খলনের গুরুতর অভিযোগ। এক নারী নেত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে এনসিপি। দলের পক্ষ থেকে তাঁকে সব সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা দেশের রাজনীতিতে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে এনসিপির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সারোয়ার তুষারকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে। দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত এই বিজ্ঞপ্তিটি গণমাধ্যমে পাঠান। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে একটি নৈতিক স্খলনের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দলের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব মো. আখতার হোসেন তাঁর স্পষ্ট ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছেন।

নোটিশে আরও বলা হয়, “আপনার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা লিখিতভাবে দলের রাজনৈতিক পর্ষদ ও তদন্ত কমিটির কাছে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হলো।”

দলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সারোয়ার তুষারকে এনসিপির সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের যৌথ নির্দেশনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

উল্লেখযোগ্য যে, সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সারোয়ার তুষারের সঙ্গে এক নারীর কথোপকথনের একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা দ্রুত ভাইরাল হয়। অডিওর বিষয়বস্তু ঘিরে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, তুষার ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন এবং হয়রানি করেছেন। এনসিপির বিজ্ঞপ্তিতে এই অডিও প্রসঙ্গ সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ছড়িয়ে পড়া অডিওই মূলত দলীয় পদক্ষেপের পেছনে কারণ হিসেবে কাজ করেছে।

নোটিশ জারির পর, সারোয়ার তুষারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুরো ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেন। তাঁর দাবি, “দলের কাছে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। কিন্তু যেহেতু বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত হয়েছে, তাই দল স্বাভাবিকভাবেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।”

তুষার জানান, তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দলের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা দেবেন এবং তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করবেন।

এই ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে একদিকে যেমন নৈতিকতার প্রশ্ন উঠছে, অন্যদিকে সামাজিক মাধ্যমে চলছে তীব্র মতবিনিময়। এখন দেখার বিষয়, এনসিপি তদন্ত শেষে কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং সারোয়ার তুষার তাঁর ব্যাখ্যায় কী তুলে ধরেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *