আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম (Baharul Alam) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মনঃসংযোগ ও প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার (১৮ জুন) রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত মে মাসের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় আইজিপি এই নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, “অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও জননিরাপত্তা পুলিশের প্রধান দায়িত্ব। প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।”
আইজিপি আরও বলেন, “ডিএমপি (DMP) বাংলাদেশ পুলিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে জনগণ সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও সেবা প্রত্যাশা করে।” তিনি থানা এলাকায় মোবাইল ডিউটি, গার্ড ডিউটি ও কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনের সময় সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন এবং ডিউটির সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেন, যাতে দায়িত্ব পালনে মনোযোগ না হারায়।
এছাড়াও তিনি ডিএমপির সব স্তরের কর্মকর্তাদের মানসিকভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন। আইজিপির নির্দেশনায় ফুটে ওঠে নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশ বাহিনীর কাঠামোগত প্রস্তুতির গুরুত্ব।
সভায় ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী (Sheikh Md. Sajjat Ali) বলেন, “গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের হার বাড়াতে হবে।” তিনি দলমত নির্বিশেষে জনগণের কল্যাণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচনের লক্ষ্যে শতভাগ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। পাশাপাশি যে কোনো পরিস্থিতিতে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড ও সম্ভাব্য নাশকতা মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন। একই সঙ্গে দাগি আসামিদের বিরুদ্ধে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ওয়ারেন্ট দ্রুত তামিলের নির্দেশ দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের কার্যকারিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সিআইএমএস (CIMS) তথ্য হালনাগাদে তৎপর হওয়ার কথা বলেন। ‘জুলাই আন্দোলনের’ মামলাগুলো দ্রুত তদন্ত ও নিষ্পত্তির নির্দেশনাও দেন তিনি।
সভায় উপস্থিত যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন মে মাসে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধের বিস্তারিত পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন—যার মধ্যে ছিল ডাকাতি, খুন, নারী-শিশু নির্যাতন, মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
এই মাসিক সভায় ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।
অপরাধ পর্যালোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনার এবং ডিএমপির সব থানার অফিসার ইনচার্জসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা।