নাটোরের বড়াইগ্রামে বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক নারী। অভিযোগ রয়েছে, বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় এবং জোর করে তালাকনামায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরের এক ইউনিয়ন পর্যায়ের সভাপতিসহ তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে বড়াইগ্রাম থানায় মামলা করেন ওই নারী। মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলার চড়ইকুল গ্রামের কাজিম উদ্দিনের ছেলে হাসানুর রহমান হাসান (৩২) এবং তার ছোট ভাই বড়াইগ্রাম সদর ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ হারুন খান (Mohammad Harun Khan), বয়স ২১ বছর।
থানা সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের টঙ্গীতে পোশাক কারখানায় কাজ করার সময় ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় হাসানুর রহমান হাসানের। সেখান থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং গত ৪ ফেব্রুয়ারি ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক ২ লাখ টাকা মোহরানায় তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কিছুদিন তারা ভাড়া বাসায় সংসার করলেও পরে হাসান নিজ গ্রামে ফিরে যান।
পরে গত ৬ জুন স্ত্রী পরিচয়ে হাসানের বাড়িতে গেলে তাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানেই জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন নেতার হস্তক্ষেপে ওই নারীকে পুনরায় হাসানের বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়।
কিন্তু ১৪ জুন শনিবার বিকেলে ওই নারীকে বাড়ির সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে জোরপূর্বক তালাকনামায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর তাকে বাসে তুলে গাজীপুরে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গাজীপুরে আহসান উল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ওই নারী পরে বড়াইগ্রামে ফিরে এসে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত হাসানুর রহমান হাসান অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, “ওই নারীর চরিত্রে সমস্যা ছিল। আমাকে জোর করে বিয়ে করেছিল। এখন আবার নতুন করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।”
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, “মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”