জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (National Consensus Commission) তাদের পূর্ব প্রস্তাবিত ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি)’ থেকে সরে এসেছে। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ (Ali Riaz) জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, প্রাথমিক যে কাঠামোতে এনসিসি গঠনের প্রস্তাব ছিল, সেখানে রাজনৈতিক দলের আপত্তি ও উদ্বেগ ছিল বিস্তর। বিশেষত এই আশঙ্কা ছিল যে, এটি ক্ষমতাসীনদের হাতে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ এনে দেবে। এ প্রেক্ষিতেই কমিশন নতুন করে একটি সংশোধিত প্রস্তাব তৈরি করেছে।
নতুন কাঠামোতে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ নামের একটি পৃথক কমিটির কথা বলা হয়েছে। এই কমিটি শুধুমাত্র দেশের সাংবিধানিক (যেমন নির্বাচন কমিশন, তথ্য কমিশন) ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের (যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন) নিয়োগ প্রক্রিয়া তদারক করবে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার জায়গা বজায় রাখতেই এই কমিটি গঠন করা হবে।
তবে উল্লেখযোগ্যভাবে, এই কমিটির আওতায় থাকছে না দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল (Attorney General) এবং সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানদের নিয়োগ। এই নিয়োগগুলো আগের মতোই রাষ্ট্রপতি ও সরকারের আওতায় থাকবে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা চাই একটি গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য কাঠামো হোক, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মত প্রকাশ করতে পারে এবং জনগণও সেটা নিয়ে আস্থা পায়।”
নতুন প্রস্তাব ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে পর্যালোচনার জন্য। কমিশনের আশা, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে এবং একটি সমন্বিত খসড়া তৈরি করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও জানান, এর বিভিন্ন বিশদ প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি নিয়ে অধিকতর আলোচনা চলবে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নে আগামী রোববার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আবারও আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।