চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কৃচ্ছ্রনীতি বাস্তবায়নে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় (Ministry of Finance)। গতকাল মঙ্গলবার (৮ জুলাই) জারি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সরকারি অর্থায়নে নতুন করে কোনো গাড়ি কেনা যাবে না এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ সফরও সীমিত থাকবে।
নির্দেশনায় স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, উন্নয়ন ও পরিচালন বাজেট থেকে গাড়ি কেনা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এমনকি পরিচালন বাজেটে যানবাহন কেনার জন্য আগে বরাদ্দকৃত অর্থও ব্যয় করা যাবে না। তবে ১০ বছরের বেশি পুরনো ও টিওএন্ডইভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হলে অর্থ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে সেই ব্যয় অনুমোদিত হবে।
এছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষি মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট ভবন ছাড়া নতুন কোনো স্থাপনা—আবাসিক বা অনাবাসিক—নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। চলমান প্রকল্পের ৫০ শতাংশের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকলে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে।
ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ওই খাতে কোনো অর্থ ব্যয় করা যাবে না, যদি না প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়।
পরিকল্পনা কমিশন (Planning Commission)-এর অনুকূলে বিশেষ প্রয়োজন দেখা দিলে উন্নয়ন সহায়তা খাতে থাকা থোক বরাদ্দের অর্থ খরচের জন্যও অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বিদেশ সফরের বিষয়ে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি অর্থায়নে বা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কোনো কর্মশালা, সেমিনার বা সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ আপাতত বন্ধ থাকবে। তবে বিদেশি বৃত্তি, ফেলোশিপ বা উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি পড়াশোনার জন্য ভ্রমণ করা যাবে। একইভাবে, সরকারি খরচে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে।
সর্বশেষে নির্দেশনায় মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় (Principal Advisor’s Office) ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর যে পরিপত্র জারি করেছিল, তা অনুসরণ করতে হবে। ওই পরিপত্রে বলা হয়েছিল, বিনোদনমূলক ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে হবে এবং সরকারি কর্মকর্তাদের দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষণ ছুটিতেও সংযত থাকতে হবে।
সরকারি ব্যয় হ্রাস ও অর্থনৈতিক স্বচ্ছতার লক্ষ্যে এই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে নতুন করে সচেতনতা তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।