চব্বিশে জুলাইয়ের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী পরিণত হয়েছিল এক প্রতিরোধের দুর্গে—যেমনটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ছিল স্ট্যালিনগ্রাড। সেই প্রতিরোধেই বিশেষভাবে জ্বলজ্বল করেছিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও আলেম সমাজের সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও ঈমানী দৃঢ়তা। সেই গৌরবগাঁথা স্মরণে আজ সোমবার (২১ জুলাই) রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে ‘মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে-২০২৫’।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ইবনে সিনা হাসপাতাল সংলগ্ন রাজপথে এ আয়োজন করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয়ে অনুষ্ঠান চলবে রাত ১১টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার। তাঁর সঙ্গে থাকবেন আরও কয়েকজন উপদেষ্টা, সচিব এবং শিল্প-সাহিত্য ও শিক্ষা অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা। পুরো আয়োজনটি পরিণত হবে এক ঐতিহাসিক প্রতিরোধ ও বীরত্বের পুনরাবৃত্তিতে।
অনুষ্ঠানের সূচিতে রয়েছে শহীদ পরিবার ও আহতদের স্মৃতিচারণ, নেতৃত্বদানকারীদের অভিজ্ঞতা বিনিময়, ২০১৩, ২০২১ এবং ২০২৪ সালের ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের প্রামাণ্য কাহিনি, হামদ, নাত, নাশিদ, কবিতা আবৃত্তি, দ্রোহের গান ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকবে ‘ছত্রিশে জুলাই’ ও ‘সাদা জোব্বা, লাল রক্ত’ নামের তথ্যচিত্র এবং প্রতিরোধ ও পুনর্জাগরণের প্রতীকী উপস্থাপনা হিসেবে এক ব্যতিক্রমী ড্রোন শো।
এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সাহসী ও বলিষ্ঠ ভূমিকাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে প্রথমবারের মতো। organizersরা বলছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় যখন সারা দেশের রাজপথ নিস্তব্ধ, তখন যাত্রাবাড়ীতে মাদ্রাসা ছাত্ররা দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ ও নৈতিকতায় উজ্জীবিত হয়ে প্রতিরোধের ব্যারিকেড গড়ে তোলেন।
এই রাষ্ট্রীয় স্মরণানুষ্ঠানে অংশ নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, যাত্রাবাড়ী ও অন্যান্য স্পটের জুলাই সহযোদ্ধা এবং সাধারণ জনগণকে। কারণ এই আয়োজন শুধু স্মরণ নয়, এটি একটি প্রজন্মকে তাদের শেকড়ের সাহসিকতা জানিয়ে নতুন করে জাগিয়ে তোলার অনুপ্রেরণা।