স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (Bangladesh Jamaat-e-Islami)-এর এক আলোচনা সভায় দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ (Dr. Shafiqul Islam Masud) বলেন, ‘‘যদি আজকের যুগে কেউ বলে মৌলবাদীদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া হবে না, তখন বলা হবে—তুমি কে, আমি কে, মৌলবাদ, মৌলবাদ!’’
‘মৌলবাদ’ প্রসঙ্গে বক্তব্য
স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় ড. মাসুদ বলেন, ‘‘আজ যারা মৌলবাদ, মৌলবাদ বলে শ্লোগান তুলছেন, তারা ফ্যাসিবাদের উত্তরসূরী। ৭১-পরবর্তী ৫৩ বছরে যারা মানুষের কাছে স্বাধীনতার সুফল পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন, তারাই আজ আবার সেই পুরনো কথাই বলছেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের দেশের মানুষ বিভক্তির রাজনীতিতে জড়ানো হয়েছিল। তখন তরুণ প্রজন্মকে বাধ্য করা হয়েছিল ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দিতে। আজ সেই একইভাবে আবার বলা হচ্ছে—মৌলবাদীদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া যাবে না। আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, এই দেশ কারও একক মালিকানায় নয়।’’
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার সমালোচনা
ড. মাসুদ অভিযোগ করেন, ‘‘এই স্লোগান তো শেখ হাসিনা বলেছিলেন। ইন্ডিয়াও বলেছিল। আজ যারা আবার সেই কথা বলছেন, তাদের উদ্দেশে বলছি—আপনারা কে? আমরা কে? মৌলবাদ, মৌলবাদ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘স্বাধীনতার নামে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে না দিয়ে একদলীয় দখলদারিত্ব কায়েম করা হয়েছে। আজও দেশে পোস্টারে, দেয়ালে লেখা দেখা যায়—‘দেশ কারো বাপের নয়’। সাহস থাকলে সেই পোস্টার মুছে দেখান।’’
শহীদ পরিবারের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ
বক্তৃতায় ড. মাসুদ বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি ৭১ পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে। ঠিক একইভাবে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের শহীদ পরিবারের সন্তানদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। পটুয়াখালীতে এক শহীদ পরিবারের সন্তানকে কবর জিয়ারতের সময় লাঞ্ছিত করা হয়েছে। যারা এসব ঘটিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘মানুষ এখন বলছে—‘যেই লাউ সেই কদু’। ৭১ সালের পর যারা স্বাধীনতাকে ব্যক্তি, পরিবার ও দলের কুক্ষিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছেন, জনগণ তাদের চিনে ফেলেছে।’’