আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এনসিপি, অভিযোগ কায়কোবাদের

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মো. কায়কোবাদ (Shah Mo. Kaykobad) বলেছেন, ‘যারা এনসিপি (নতুন পার্টি) করেছে, তারা যদি প্রকৃত অর্থে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, তাহলে আমি নিজেই তাদের মঞ্চে জায়গা করে দেব। কিন্তু আজ তারা যে কাজ করেছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না—তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।’

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগরের হায়দারাবাদ সামসুল হক কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি। জনসভাটি আয়োজন করে স্থানীয় বিএনপি।

কায়কোবাদ বলেন, ‘আমাদের ছাত্ররাই দেশের ভবিষ্যৎ। তারা আমাদের তাজ। কিন্তু আজ কিছু নামধারী ছাত্র সমাজকে কলুষিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ড. ইউনূস (Dr. Yunus) সাহেবকে বলতে চাই, আপনি আমাদের গর্ব। ছাত্রদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে কাজ করবেন। পড়ালেখার ক্ষতি যেন না হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। আর মুরাদনগরের জনগণ, আপনারা দোয়া করবেন, এই দেশে যেন একটি নিরপেক্ষ ও সুন্দর নির্বাচন হয়।’

ইউসুফ হারুনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

কায়কোবাদ বলেন, ‘যারা এনসিপি করেছে, তারা আজ আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন (Yusuf Abdullah Harun)-এর অনুসারীদের সঙ্গে মিলে কাজ করছে। অথচ এই ইউসুফ হারুনের লোকজনই একসময় আমাকে মেরে ব্রিকফিল্ডের আগুনে পোড়াতে চেয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন, যাকে আল্লাহ রক্ষা করেন, তাকে কেউ ঠেকাতে পারে না।’

জনগণের প্রতি ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা

নিজ উপজেলার মানুষদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৮৬ সাল থেকে আমি আপনাদের কামলা হিসেবে কাজ করছি। আমি নেতা না, আমি কর্মী। আপনারা আমাকে পাঁচবার সংসদ সদস্য বানিয়েছেন—এই ঋণ আমি কোনো দিন শোধ করতে পারব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই ১৯৭১ সালের শহীদদের জন্য দোয়া করি, আর সেইসঙ্গে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের জন্যও সুরা ফাতিহা পাঠ করি। আজ এই মাঠে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি, তা তাদেরই ত্যাগের কারণে।’

প্রশাসনের উদ্দেশে কটাক্ষ

কায়কোবাদ কুমিল্লার পুলিশ সুপারের (এসপি) দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘মুরাদনগরে সবচেয়ে বেশি মামলা খেয়েছে যে ছেলে, যে জেলে থাকা অবস্থায় তার মা মারা গেছে—সেই মাসুদ এখনও জেলে। এসব আওয়ামী লীগকে সাহায্য করার কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়।’

তিনি বলেন, ‘যখন এই এসপি গাজীপুরে ছিলেন, তখন তিনি কী করেছিলেন, তা আমরা জানি। মুরাদনগরের ওসিকে তিনি বদলি করেছেন। কিন্তু আমি বলছি—তাকে এখান থেকে চলে যেতে হবে।’

অন্যান্য বক্তাদের কণ্ঠে দলের ঐক্যর ডাক

সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক তৌফিক আহমেদ মীর, সাবেক মেজর শাজাহান, মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সামসুল হকের স্ত্রী জাহানারা বেগম।

এছাড়াও বক্তব্য দেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, কুমিল্লা উত্তর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তৌহিদুর রহমান তৌহিদ এবং মুরাদনগর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সোহেল সামাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *