সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. তুহিন মালিক (Dr. Tuhin Malik) তরুণ রাজনীতিকদের প্রতি এক গভীর বার্তা দিয়েছেন। ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, পোস্টার-প্ল্যাকার্ডে আগুনঝরা স্লোগান দেওয়া সহজ, কিন্তু বাস্তবে সেই আগুন ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ফেসবুক বা টকশোতে পরিবর্তনের মঞ্চ কাঁপানো বক্তব্য দেওয়া সম্ভব, কিন্তু বাস্তবে পরিবর্তন আনা এত সহজ নয়।
ড. তুহিন মালিক সতর্ক করে বলেন, বিজয়ের মুহূর্তে পাশে সবাই থাকে, কিন্তু দুর্দিনে সঙ্গী পাওয়া দুষ্কর। রাজনীতির প্রকৃত রূপ হলো রোলার কোস্টারের মতো, যেখানে কখনো উত্থান আবার কখনো পতন অনিবার্য। তিনি স্পষ্ট করে দেন, যারা রাজনীতির পথে পা বাড়িয়েছেন, তাদের বাধা, সমালোচনা আর হতাশার মুখোমুখি হতেই হবে। তবে হতাশ হয়ে হার মানলে চলবে না। দুর্বলতাকে চিহ্নিত করে নিজেকে সংশোধন করার মানসিক দৃঢ়তা ও সাহস থাকতে হবে।
ঢাকাকেন্দ্রিক রাজনীতিকে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেওয়ার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন ড. মালিক। তিনি বলেন, “উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় থেকে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করে জাতীয় রাজনীতিতে যুক্ত করতে হবে। শুধু ছাত্র রাজনীতিতে আটকে থাকলে চলবে না। যুবক, বয়স্ক, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবী—সবাইকে নিয়ে দলকে বিস্তৃত করতে হবে।” তাঁর মতে, আসল শক্তি তৃণমূলে।
ড. তুহিন মালিক আরও স্পষ্ট করে দেন, রাজনীতির মূল পরীক্ষা হলো জনগণের কাছে পৌঁছানো। তিনি সতর্ক করে বলেন, “দিনশেষে এটা ভোটের রাজনীতি। যদি মার্কা, নেতা ও রাজনৈতিক বক্তব্য ঘরে ঘরে না পৌঁছায়, তাহলে শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের তালিকায় নতুন দল যুক্ত হওয়া ছাড়া জনগণের জীবনে কোনো পরিবর্তন আসবে না।”
তরুণ রাজনীতিকদের তিনি আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা সেই বিপ্লবের নেতা, যাদের হাত ধরে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। নিজেদের শক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করুন। যতক্ষণ সঠিক পথে থাকবেন, জনগণ আপনাদের পাশে থাকবে। কিন্তু পথ হারালে বিপ্লবকেই আমরা হারিয়ে ফেলবো।”
স্ট্যাটাসের শেষাংশে তিনি তরুণ নেতৃত্বের প্রতি শুভকামনা জানান এবং তাদের উদ্দেশ্যে আশাবাদের বার্তা দিয়ে শেষ করেন।