গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizen Party – NCP) আয়োজিত একটি সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতায় পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে তদন্ত। নিহতদের মধ্যে চারজনের মৃত্যুকে ঘিরে পুলিশ ইতোমধ্যে চারটি পৃথক হত্যা মামলা করেছে। প্রতিটি মামলায় উল্লেখযোগ্যভাবে ১,৪০০ থেকে ১,৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে, যাদের সবাইই বলে ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ (Awami League) এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
চার মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ছয় হাজার ছুঁয়েছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, পঞ্চম নিহত রিকশাচালক রমজান মুন্সীর মৃত্যুর ঘটনায় আরও একটি হত্যা মামলা করা হবে। গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান শনিবার (১৯ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কী ঘটেছিল সেদিন?
সূত্র জানায়, গত বুধবার গোপালগঞ্জে এনসিপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে মাদারীপুরগামী গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় বন্দুকের গুলিতে প্রাণ হারায় ১৭ বছর বয়সী রমজান কাজী। তার হত্যার মামলার বাদী হয়েছেন সদর থানার এসআই আইয়ুব হোসেন। এজাহারে বলা হয়, হামলায় অংশ নেয়া ছিল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও একইভাবে দীপ্ত সাহা (২৭), সোহেল রানা মোল্লা (৩০) এবং ইমন তালুকদার (১৭) নামে তিনজনের মৃত্যুতে আলাদা মামলা হয়েছে, যার প্রতিটিতে একই পরিমাণ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিকশাচালক রমজান মুন্সী (৩২)। তার মৃত্যুর ঘটনায় আলাদাভাবে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
তদন্তে পুলিশ, ময়নাতদন্তে বিলম্ব
পুলিশ জানায়, নিহতদের মধ্যে কারো ময়নাতদন্ত এখনো হয়নি। তবে খুব দ্রুত এটি সম্পন্ন করা হবে। তবে দীপ্ত সাহার মৃতদেহ ইতিমধ্যেই দাহ করা হয়েছে, ফলে তার ময়নাতদন্ত সম্ভব নয়।
পুলিশের দায়ের করা মামলাগুলোর এজাহারে উল্লেখ আছে, সমাবেশ শেষে গাড়িবহরে হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা পুলিশের দিকেও গুলি ছোড়ে। লঞ্চঘাট ও মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় সংঘর্ষে আহতদের স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় এখনও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।