“নোট অব ডিসেন্ট” সহ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে নীতিগত ঐক্য

‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নীতিগত ঐক্যে পৌঁছেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (National Consensus Commission)। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে এই ঐকমত্যের ঘোষণা দিলেও গঠনপ্রক্রিয়া ঘিরে স্পষ্ট মতানৈক্য রয়ে গেছে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে। বিশেষ করে বিএনপি (BNP), সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, লেবার পার্টি, ও খেলাফত মজলিস এই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে।

কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, র‌্যাঙ্কিং ভিত্তিক একটি নির্দিষ্ট কাঠামোতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এই কাঠামোয় প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, বিরোধীপক্ষের ডেপুটি স্পিকার, প্রধান দুই দলের বাইরে তৃতীয় বৃহত্তর দলের একজন প্রতিনিধি এবং দুই জন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত সদস্যদের মধ্য থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানসহ অন্যান্য সদস্য নির্বাচন করবে।

তবে, এই র‌্যাঙ্কিং পদ্ধতির বিরোধিতা করেছে বিএনপি ও সমমনা জোট। তাদের দাবি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন সংসদের মাধ্যমে নির্ধারিত হওয়া উচিত, যাতে তা অধিকতর স্বচ্ছতা ও সাংবিধানিক বৈধতার ছায়ায় গঠিত হয়। বিএনপি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, সরকারের গঠনপ্রক্রিয়া কমিশনের হাতে না রেখে নির্বাচিত সংসদের উপর ন্যস্ত করলেই প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক চর্চা সম্ভব।

কমিশনের ঘোষণার পর পরই দলগুলোর পক্ষ থেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। তারা একদিকে যেমন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি অনুমোদনকে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের একটি সম্ভাব্য পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে, অন্যদিকে গঠন কাঠামোকে নিয়ন্ত্রণের একটি নতুন ফাঁদ বলেও দাবি করছে।

কমিশনের তরফ থেকে এখনো এই নোট অব ডিসেন্টের ভিত্তিতে কোনও নতুন আলোচনার ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। ফলে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতির মূল কাঠামো অনুমোদন পেলেও, তার প্রয়োগ ও বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সমন্বয়ের পথ যে এখনো চ্যালেঞ্জের, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *