‘জুলাই আন্দোলন’ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেন ফাহাম আব্দুস সালাম

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক আলোচিত সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন ‘জুলাই আন্দোলন’ নিয়ে নিজের হতাশা ও ব্যথা প্রকাশ করেছেন লেখক ও সমাজ বিশ্লেষক ফাহাম আব্দুস সালাম (Fahham Abdus Salam)। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এই আন্দোলনের ‘কলেকটিভ ওনারশিপ’ বা সমষ্টিগত মালিকানার ধারণা ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

ফাহাম বলেন, “জুলাই হোলো বাংলাদেশের প্রথম এতিম আন্দোলন। এর মালিকানা আসলে স্পেসিফিকালি কারো নাই। এই ব্যাপারটা আমাকে খুব আশাবাদী করেছিলো।”

কিন্তু সেই আশাবাদ এখন হতাশায় রূপ নিয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “মনে করেছিলাম যে কালেকটিভ ওনারশিপ কী – বইংগা বুঝবে। কিন্তু আমি হতাশ। দিনবাদিন কাইজ্জা বেড়েই চলেছে। আগামী বছর এই সময় মানুষ সম্ভবত জিজ্ঞেশ করবে – ভাই আপনি জুলাই নাহিদ গ্রূপের না জুলাই সায়ের গ্রূপের না আপনি জুলাই সাদিক গ্রূপের।”

এই বক্তব্যে আন্দোলনের বিভক্তি ও গ্রুপিংয়ের প্রতি একধরনের ব্যঙ্গাত্মক উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি।

ফাহাম তার পোস্টের শেষ অংশে আরো গভীর এক বেদনার কথা বলেন: “দুঃখ লাগে আমার। একটা ভাষাহীন ক্ষুধার্ত জাতিকে দেয়া হয়েছে ইতিহাসের ভার। অথচ গরীবরা কখনোই ইতিহাস লিখতে পারে না। তারা ইতিহাসের বিষয়বস্তু হবে। যারা গরীব তাদের শাস্তি হোলো নিজের ইতিহাস নিজে লিখতে না পারা।”

এই কথাগুলোতে স্পষ্ট হয়েছে তার দৃষ্টিতে ‘জুলাই আন্দোলন’ কেবল একটি রাজনৈতিক র‍্যালি নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক ক্ষণ—যেটির মধ্যে সম্ভাবনা ছিল সমাজের প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠার। কিন্তু সেই সম্ভাবনা গোষ্ঠীগত স্বার্থ ও নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বে চাপা পড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।

ফাহামের বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ইতোমধ্যেই আলোচনার ঝড় তুলেছে। কেউ একে গভীর বাস্তবতা হিসেবে দেখছেন, কেউ বা ‘আত্মসমালোচনার সাহস’ বলেও প্রশংসা করছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এ বক্তব্য আন্দোলনটিকে আরও দুর্বল করে তুলবে।

তবে সমালোচনার ভেতর দিয়েই যদি আত্মসমালোচনার জায়গা তৈরি হয়, তাহলেই হয়তো ‘জুলাই’ তার প্রকৃত অবস্থান খুঁজে পেতে পারে—এমন মতও অনেকের।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *