ভোটে সেনাবাহিনীর পূর্ণ ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন

আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে গত জুলাই মাসের অভ্যুত্থানে। সেই সময়ে প্রশাসন ছিল সম্পূর্ণভাবে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র নিয়ন্ত্রণে। এমনকি নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সেনাবাহিনীর কিছু ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তবে এবার সেই হারানো কর্তৃত্ব ফেরত আসছে সেনাবাহিনীর হাতে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী আর কেবলমাত্র ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে নয়, অন্যান্য বাহিনীর মতো পূর্ণ ক্ষমতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে। এজন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (RPO) সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। সংশোধিত প্রস্তাবটি প্রধান উপদেষ্টা দপ্তরে পাঠানো হবে। এর ফলে আর ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতির ওপর নির্ভর করতে হবে না; সেনাবাহিনী স্বাধীনভাবেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করতে পারবে।

জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান এল মাসুদ (Abdur Rahman El Masud) বলেন, এতদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বিজিবি থাকলেও এবার সরাসরি সেনাবাহিনীও অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক এমদাদুল ইসলাম (Emdadul Islam) এ প্রসঙ্গে জানান, আরপিও সংশোধনের পর আর সরকারের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। নির্বাচন কমিশন সরাসরি সেনা সদর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেনাসদস্যদের কাজে লাগাতে পারবে। তার মতে, সেনাবাহিনীর ওপর কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাব কাজ করে না, তাই তাদের মাঠে নামানো নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, সেনাবাহিনী যদি পূর্ণ ক্ষমতায় মাঠে থাকে, তাহলে শুধু জাতীয় সংসদ নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ভোটারদের আস্থা ফেরত আসবে। জনগণের দীর্ঘদিনের সেই প্রশ্ন—“ভোটে সেনাবাহিনী কবে ফিরবে?”—এবার বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *