মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাওয়া সেনা কর্মকর্তারা আগামীকাল বুধবার পর্যন্ত আদালতে হাজির না হলে, তাঁদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করতে জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম (Gazi MH Tamim)।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তারা যদি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি তাঁদের গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে, তাহলে আদালত চাইলে তাঁদের জামিন দিতে পারেন অথবা কারাগারে পাঠাতে পারেন। তবে কাল যদি কেউ না আসে বা তাদের হাজির না করা হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী তাঁদের নাম দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে ছাপানো হবে।”
তিনি বলেন, এরপরও যদি তারা অনুপস্থিত থাকেন, তখন তাদের ‘পলাতক’ ঘোষণা করে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে মামলার বিচার প্রক্রিয়া চালানো হবে। এটি আইন অনুযায়ী স্বাভাবিক নিয়ম।
আলোচ্য দুটি মামলায় গত ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে মোট ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। এর মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন এবং একজন অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (এলপিআর)। এই ১৬ জনের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম হলেন গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ (Major General Kabir Ahmed)।
১১ অক্টোবর ঢাকার সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান (Major General Md. Hakimuzzaman) জানান, পরোয়ানাভুক্ত ১৬ জনের সবাই বর্তমানে সেনা হেফাজতে আছেন, তবে এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় না ঠিক কীভাবে তারা রাখা হয়েছে।
সেনা হেফাজতের এই বিষয়টি প্রসিকিউশনের কাছে পৌঁছায়নি বলেও উল্লেখ করেন তামিম। তিনি বলেন, “ট্রাইব্যুনাল পরোয়ানা জারি করেছে, সেসব যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। প্রসিকিউশন কেবল ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে যদি জানতে পারে যে পরোয়ানা কার্যকর হয়নি—নন-এক্সিকিউশন রিপোর্ট এসেছে—তবেই আমরা পরবর্তী ধাপে যাব।”
তামিম আরও বলেন, “আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। গণমাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কি বলা হচ্ছে, সেটি নয় বরং ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ ও তথ্যই গ্রহণযোগ্য হবে।”