আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি (BNP) ও গণ অধিকার পরিষদ (Gono Odhikar Parishad)-এর মধ্যে প্রাথমিক আসন সমঝোতা হয়েছে। আলোচনার ফলস্বরূপ, পটুয়াখালী-৩ আসনে দলের সভাপতি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur) এবং ঝিনাইদহ-২ আসনে সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। যদিও নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, গণ অধিকার পরিষদের প্রার্থীরা নিজ দলের প্রতীক ‘ট্রাক’ নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামবেন। অর্থাৎ, বিএনপির প্রতীকে নয়, তারা থাকবেন তাদের দলীয় প্রতীকে।
তবে মাত্র দুটি আসনে সমঝোতা হওয়ায় গণ অধিকার পরিষদের অভ্যন্তরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “আমরা অন্তত আরও কয়েকটি আসনে ছাড় আশা করেছিলাম। মাত্র দুটি আসনে সমঝোতা আমাদের জন্য হতাশাজনক।”
এই অসন্তোষের মধ্যেই দলটি জানিয়েছে—বাকি ৮/৯ টি আসনগুলোতে তারা ‘ট্রাক’ প্রতীক নিয়ে পৃথকভাবে প্রার্থী দেবে। সমঝোতার অংশ হিসেবে এই দুই আসনে বিএনপি তাদের প্রার্থী না দিলেও অন্য আসনগুলোতে এমন ছাড় নেই। তবে তাদের এই ঘোষণা শুধুমাত্র তৃণমূলের অসন্তোষ ঠেকানোর জন্যই দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও মিডিয়া সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, “আমরা বিএনপিকে ১০টি আসনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তারা আপাতত দুটি আসনের বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এই সমঝোতা এখনো চূড়ান্ত নয়। সোমবার দলের নির্বাহী পরিষদের সভায় বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে, বিএনপির অভ্যন্তরেও তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্ব। পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে নির্বাচন করতে প্রস্তুত রয়েছেন দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। তিনি এ আসনে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রাজনীতি করছেন এবং জনপ্রিয়তার দিক থেকেও এগিয়ে আছেন।
জানা গেছে, তিনি সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবেন। ফলে এই আসনে উভয় দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই নেতার অবস্থান নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী মাঠে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদের সম্পর্ক কেমন থাকবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। দলের অভ্যন্তরে সমঝোতা রক্ষা করা, তৃণমূলের কর্মীদের মনোভাব সামাল দেওয়া এবং একযোগে নির্বাচনী প্রচারে একাত্মতা নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


