ফারুকীর প্রেস কনফারেন্সে ফ্যাসিস্টদের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে উত্তপ্ত প্রতিক্রিয়া

আজকের (২৮ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী (Mostofa Sarwar Farooki) এর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিকের আচরণ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে তিনজন সাংবাদিক—রহমান মিজান (Rahman Mizan), বাশার (Bashar) এবং ফজলে রাব্বি (Fazle Rabbi)—এর প্রশ্ন এবং মন্তব্য নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

রহমান মিজান, যিনি দীপ্ত টিভির সিনিয়র রিপোর্টার এবং আগে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর (PM বিট) কাভার করতেন, তিনি ফারুকীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, “আপনি জুলাই মাসে ১৪০০ শহীদের কথা বলছেন কেন? এই সংখ্যা কোথা থেকে এসেছে? এবং কোন যুক্তিতে আপনি প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে ‘খুনি’ বলছেন, যখন আদালত এখনো কোনো রায় দেয়নি?” তার প্রশ্নের ভঙ্গি ও ভাষা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, যা নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার আদর্শের পরিপন্থী বলে মনে করা হচ্ছে।

চ্যানেল আইয়ের সিনিয়র রিপোর্টার বাশার আরও একধাপ এগিয়ে বলেন, “জাতীয় ঐক্য কীভাবে গড়ে উঠবে যদি শোভাযাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়?” তার এই মন্তব্যের মাধ্যমে অনেকের কাছে মনে হয়েছে, তিনি প্রতিবাদের মৌলিক অধিকারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।

তৃতীয় ব্যক্তি, এটিএন বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি ফজলে রাব্বি, যিনি পূর্বে প্রধানমন্ত্রীর বিট রিপোর্টার ছিলেন, ফারুকীকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “আপনি কীভাবে দাবি করছেন ১৪০০ মানুষ হত্যা করা হয়েছে?” পরবর্তীতে তার উত্থাপিত বক্তব্য আবারও রহমান মিজান পুনরাবৃত্তি করেন, যা উপস্থিত অনেকের কাছে প্রভাবিত ও পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হয়েছে।

সম্মেলনে উপস্থিত রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মানবাধিকার কর্মীরা দাবি করেন, এই তিনজন সাংবাদিক মূলত আওয়ামী লীগপন্থী এবং ‘হাসিনার দালাল সিন্ডিকেট’-এর অংশ। তারা এক ধরনের ফ্যাসিবাদী মানসিকতার প্রতিনিধিত্ব করছেন, যারা জনতার প্রতিবাদকে তুচ্ছ করে দেখানোর চেষ্টা করছেন।

বক্তব্যে আরও বলা হয়, যারা প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের বিট রিপোর্টার ছিলেন বা আছেন, তাদের একটি বড় অংশই আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত থেকে সাংবাদিকতার নিরপেক্ষতার শপথ ভেঙেছেন। তাদের দৃষ্টিতে জুলাইয়ের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড যেন কেবল ‘মারামারির ভুল বোঝাবুঝি’র মতো একটি সাধারণ ঘটনা, যা জনগণের মনে ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে।

৫ই আগস্ট পরবর্তী সংস্কারের যে দুরবস্থা, আজকের এই ঘটনা তার একটি নির্মম উদাহরণ হয়ে রইল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *