আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মত দিয়েছেন ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman)। তার মতে, সংস্কার প্রক্রিয়া গতিশীল হলে এবং অংশীজনরা আন্তরিক হলে সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব। তবে তার জন্য তিনি দুটি সময়কে উপযুক্ত মনে করছেন— রোজা শুরুর আগের ফেব্রুয়ারি মাস অথবা প্রয়োজনে সর্বোচ্চ এপ্রিল মাসের মধ্যে।
শনিবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর মগবাজারে আয়োজিত জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) জেলা ও মহানগরী আমীর সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বক্তব্যে তিনি সরকারের দেওয়া নির্বাচনকালীন সময়সীমা— ডিসেম্বর থেকে জুন— এর বাস্তবতা ও সীমাবদ্ধতা নিয়েও মন্তব্য করেন। রোজার সময়কাল ফেব্রুয়ারি শেষে ও মার্চের শুরুতে হওয়ায় তখন নির্বাচন করাটা অবাস্তব হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আলোচনায় অর্থপাচার মামলার বিচারকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, “পেশিশক্তি ও কালো টাকার প্রভাব থেকে রাজনীতিকে মুক্ত করতে হলে পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতির নির্বাচন চালু করতে হবে। এই পদ্ধতিতে অনেক উন্নত দেশ নির্বাচন করে থাকে।”
সম্মেলনে ৫ আগস্টের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আহত নেতাকর্মীদের ক্ষোভের কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “ওই সময়কার দাবিগুলোর মধ্যে ছিল— রাজনৈতিক দলগুলো যেন তাদের কর্মীদের সামাজিক অপকর্ম থেকে রক্ষা করে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু দল সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এখন যেখানে যাই, সেখানে শুনতে হয়— ‘রেট’ আগের চেয়ে বেশি।” এ বক্তব্যে রাজনৈতিক অনুশাসনের অভাব ও দুর্নীতির বিস্তার সম্পর্কে ইঙ্গিত দেন তিনি।
এছাড়া, বর্তমান সরকারের অন্তর্বর্তী উপদেষ্টাদের উদ্দেশে শফিকুর রহমান বলেন, “কিছু উপদেষ্টা মাঝে মাঝে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করেন। এ ধরনের আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিস্ময়কর।” তিনি উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতা রক্ষা ও দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানান।
নারী সংস্কার কমিটির বিষয়ে কড়া অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, “যে কোনো সুপারিশ যদি কোরআনের বিরোধী হয়, জনগণ তা মানবে না। নারী সংস্কার কমিটি বাতিল করতে হবে।” এ দাবির মাধ্যমে ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার বিষয়টি সামনে আনেন তিনি।
বক্তব্যের শেষাংশে তিনি জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “জাতীয় স্বার্থে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।” জামায়াত সরকারের সংস্কার উদ্যোগে সহযোগিতা করছে বলেও জানান তিনি, তবে জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছু হলে তার প্রতিবাদ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন।