জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ (Ali Riaz) জানিয়েছেন, সরকার কিংবা ঐকমত্য কমিশনের হাতে কোনো নির্দিষ্ট এজেন্ডা নেই। বরং কমিশন একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে চায়, যার মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটি জাতীয় সনদ প্রস্তুত করা হবে। শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট-এর সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা একসঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সনদ তৈরির চেষ্টা করছি। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এ লক্ষ্য পূরণ করতে চাই। সুনির্দিষ্ট ছয় মাসের মধ্যেই এই সনদ চূড়ান্ত করার ইচ্ছা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “একমত হতে হবে এমন কোনো চাপ নয়, তবে রাষ্ট্রের পুনর্গঠন ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর জন্য যেসব বিষয়ের প্রয়োজন, সেখানে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবো বলেই আশা করি।”
সংলাপে অংশ নিয়ে এনপিপি-র চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, যিনি জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন, বলেন, “আমরা আপনাদের ডাকে সাড়া দিয়েছি। আমরা এমন একটা ভোট চাই, যেখানে জনগণ নিজের ভোট নিজে দিতে পারে, কারো টাকায় বা জোরে নয়। আমাদের একটাই প্রত্যাশা—প্রধান উপদেষ্টা যেন এমন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করেন, যেখানে মানুষ ১৫ বছর পর বলতে পারে: ‘আমার ভোট আমি দিয়েছি, কেউ কিনতে পারেনি।’”
এ সময় তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের মধ্যে সমমনা জোট ১১২টিতে একমত, ২৬টিতে অসম্মত এবং ২৮টি প্রস্তাবে আংশিক সহমত পোষণ করেছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বর্তমানে পাঁচটি পূর্ববর্তী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ একীভূত করে চূড়ান্ত করতে কাজ করছে। সেই সঙ্গে, ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মতামত গ্রহণের প্রক্রিয়াও চলছে। সেই মতামতের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপও চালিয়ে যাচ্ছে কমিশন।
এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু একটি নথি তৈরি নয়—বরং একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য এবং জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র কাঠামোর পথে ঐকমত্য গড়ে তোলা।